গোসলে গরম পানি ব্যবহারে সতর্কতা
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
চলছে শীতকাল। প্রতিদিনের গোসলে এখন গরম পানি ছাড়া চলেই না। শীতের দিনে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও ঠাণ্ডা থাকে। এ পানি দিয়ে গোসল করা রীতিমতো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আবার গরম পানিতেও নানা সমস্যার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে নানা দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকে।
গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টির সমাধানে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করে বলছেন যে, গরম পানির গোসল হচ্ছে জলচিকিৎসা, যা সব সময়ই ভালো। তবে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে যদি এর ব্যবহারে সাবধানতি অবলম্বন না করেন।
পানি অতিরিক্ত গরম হবে না: অবশ্যই সহনীয় পর্যায়ে আরামদায়ক উষ্ণতার পানিতে গোসল সারতে হবে। তাপমাত্রা সঠিক থাকলে এ গোসল আপনাকে প্রশান্তি এনে দিবে। সব ক্লান্তি ধুয়ে নিয়ে যাবে উষ্ণ পানি।
কিন্তু সাবধান! তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্ত হলে অবসাদ একলাফে মাথায় চড়ে বসতে পারে। অতি গরম পানিতে গোসলের পর ঘুম হারাম হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ইনসমনিয়ায় যারা ভোগেন, তাদের জন্য অধিক উষ্ণতায় গোসল আত্মহত্যার সামিল। আর গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ওপরে ওঠা উচিত নয়।
অধিক উষ্ণতায় ঘাম বের হয়: মানুষের শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজ আছে যা করতে গেলে দেহে বেশ ভালো পরিমাণ তাপমাত্রার উদয় হয়। মেদ কমাতে ক্যালরি খরচের জন্য ব্যায়াম করলে ঘাম ঝরে। আবার অনেকে অধিক গরম পানিতে ঘাম ঝরানোর কথা বলেন। কিন্তু পরিশ্রমের পর বেশি গরম পানি ব্যবহার করা কখনও উচিত হবে না। এতে ডিহাইড্রেশনের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আবার স্বাভাবিক পানি এবং অধিক উষ্ণ পানির ব্যবহার আরো বিপজ্জনক। হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সহনীয় গরম পানি যদি আপনার স্বাভাবিক পরিমাণ ঘাম ঝরাতে পারে, তবে তা ভালো ফল দেবে।
মাথা ঠাণ্ডা রাখুন: গরম পানিতে অনেকেরই হালকা মাথাব্যাথা বোধ হতে পারে। সতেজ ভাব নষ্ট হয়ে যায় অনেকের। এ সমস্যা যাদের হয়, তারা মাথা বা হাত বা পা অথবা তিনটিই গরম পানি থেকে দুরে রাখবেন। কারণ দেহের সব স্থানে ভিন্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে। অধিক তাপ সাধারণত দেহের ওই তিন অংশ দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্যথা কৃত্রিম জ্বর হতে পারে।
তাই গরম পানি গায়ে ঢালুন। আর ঠাণ্ডা পানি হাতে, পায়ে আর মাথায় নিন। তবে এর পরও দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে। তবুও সেক্ষেত্রে মানসিক বিষাদের ঘনঘটা কিছুটা হালকা মনে হবে।
উষ্ণ পানির গোসলে আড়মোড়া ভাঙা: মূলত আড়মোড়া ভাঙা বা স্ট্রেচ করা যতটা উপকারী বলে মনে হয়, আসলে ততটা নয়। আবার উপকারহীনও বলা যায় না। এতে পেশির নানা ব্যাথা দূর হতে পারে।
ঘন শ্বাস-প্রশ্বাসের আবির্ভাব: গরম পানিতে গোসলের সময় অনেকের ঘন এবং ভারী নিঃশ্বাস নিতে হয়। এটি ক্ষতিকর কোনো বিষয় নয়। গরম পানির বাষ্প এবং তাপমাত্রার সাথে রক্তের ক্রিয়াকলাপে শ্বাস ভারি হয়ে আসতে পারে। এর মাধ্যমে টেনে নেয়া গরম বাষ্প আবার বের হয়ে আসে।
এই শীতে গরম পানি দিয়ে গোসল করার সকলেরই উচিৎ হবে অল্প কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে নিজেকে সুস্থ ও মানসিক চাপ মুক্ত রাখা।
প্রতিক্ষণ/এডি/ফারুক